পাতা হ্যায়, ইহা সে বহুত দূর... ম্যায় ওহা মিলুঙ্গা তুঝে...

 


"পাতা হ্যায়, ইহা সে বহুত দূর... ম্যায় ওহা মিলুঙ্গা তুঝে..."

উন্মাদ~The Huligan🍀

আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই একজন খুব কাছের একজন থাকে যাদের হারানোর কথা ভাবলেও বুক কেঁপে ওঠে। অজান্তেই কখন তাদের হাতে জীবনের চাবিকাঠি দিয়ে ফেলি বোঝার অবকাশ থাকেনা। রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও কখন তারা এতটা কাছের, এতটা আপন, এতটা প্রয়োজন, এতটা বিশ্বাসযোগ্য হয় তা কল্পনা করা অসম্ভব। সম্পর্ক ভীষন অকৃত্রিম ও তার আন্তরিকতা, নির্ভরতা বাকি সম্পর্ক থেকে অনেকটা আলাদা। একবুক অক্সিজেন নিয়ে হাওড়া ব্রীজে দাঁড়িয়ে সকলের সামনে সেই সম্পর্কের কথা, বন্ধুত্বের কথা, ভালবাসার কথা বলার সাহস ও স্পর্ধা কোনোটারই অভাব থাকেনা। শুধু মনে হয় এই মনের মানুষটার কথা সবাইকে বলে বেড়াই, সবাই জানুক অথচ তার সাথে অন্যের সামান্যতম ঘনিষ্ঠতায় অভিমান হয় বড্ডো, তাই প্রাইভেসি আর সিক্রেটনেস এর মধ্যে পার্থক্য টা আমরা বুঝি। কোনো বাধা থাকেনা, নিয়মের বেড়াজাল থাকেনা, সমস্ত কথা, সকল অনুভূতি, চেপে রাখা কষ্ট সবকিছু সেই মানুষটাকে আমরা জানাতে চাই, অকারনে বিরক্ত করতে চাই, মাঝরাতে ফোনে আবোল তাবোল বকতে পারি, যেকোনো বিষয়ে আলোচনা করতে পারি, এমনকি তার ফেসবুকে পোস্টে অযাচিত হাহা রিয়্যাক্ট দিয়ে খুনসুটি করতে পারি, কমেন্ট বক্সে ঝগড়া করতে পারি, সকলে জানবে আমাদের সম্পর্কের কথা আর তারাও ভাবে আমাদের মতো একটা সম্পর্ক হোক তাদের। ফোন বা মেসেজ না এলে আকস্মিক চিন্তা, শরীর খারাপ হলে নিজের খারাপ লাগা, ঝগড়া হলে কাজে-পড়াশুনায় মন না দিতে পারা, কখন ঠিক হবে এই নিয়ে ভাবা, উপায় খোঁজা, দোষ খুঁজে ক্ষমা চাওয়া বা না দোষ থাকতেও ক্ষমা চেয়ে সব ঠিকঠাক করে নেওয়া অথবা তার ক্ষমা চাওয়ার আগেই তাকে মানিয়ে নিয়ে কাছে টেনে নেওয়া এবং সাথে সাথে পুরোনো কাসুন্দি ভুলে নতুন করে শুরু, এই সম্পর্ক গুলোর এগুলোই বিশেষত্ব। কোনো সময় অধিকার বা খুনসুটির সীমা অতিক্রম হলে একে অপরকে সহজ ভাষায় বোঝানো, এবং অপর জনের সহোযোগিতা এবং কাছের মানুষ কে বোঝা সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যারা সময়ের সাথে এক‌ই ভাবে থেকে যায় বা ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, বিশ্বাস বাড়ে, বন্ধুত্ব বাড়ে, ভালোবাসা বাড়ে তাদের উভয়পক্ষ‌ই সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে, সমান দায়বদ্ধ, কোনো বাহ্যিক পরিস্থিতি, কোনো ব্যাস্ততা, নতুন কোনো মানুষ তাদের সম্পর্কের মাঝে আসতে পারেনা, বা সম্পর্ককে ছাপিয়ে অন্যের গুরুত্ব অগ্রাধিকার পায়না। যত কথা কাটাকাটি হয়, ঝগড়া হয় তত কাছের মানুষ টাকে বোঝা যায়, তার ভালো লাগা মন্দ লাগা সম্পর্কে জানা যায়, আর‌ও কাছে আসা যায় ও সম্পর্কের একঘেয়েমি কাটে, তত টান বাড়ে।

 

"মেরি বেবাসী কা বায়ান হ্যায়

বাস চাল রাহা না ইস ঘাড়ি,

রাস হাসরাত কা নিচোর দু

কাস বাহোন মে আ, তোড় দু"

 

কিন্তু যেখানে সময়ের সাথে ক্রমশ একতরফা হতে থাকে, প্রাথমিক চাহিদা গুলো ছাড়াও অন্যান্য বিষয় গুরুত্ব পায়, বিরক্তি ভাব আসে, এতদিন যেগুলো তে সম্পর্কের প্রভাব পরেনি সেগুলো নতুন করে দেখা দেয়, ব্যাক্তি স্বাধীনতায় এতটাই মগ্ন থাকে যে সম্পর্কের প্রতি উদাসীন হয়ে পরে, সেখান থেকে ভাঙন শুরু হয়। টান কমেনা, মায়া থেকে যায় একটা আর সেটার জন্যই একেবারে বেড়িয়ে আসতে পারেনা কিন্তু থাকার মতো আর থাকেনা।

 

"কাটে চাহে জিতনা, পারো সে হাওয়াও কো

খুদ সে না বাঁচ পায়েগা তু...

তোড় আসমানো কো, ফুক দে জাহানো কো

খুদ কো ছুপা না পায়েগা তু..."

 

যখন মানুষ পাল্টে যাওয়ায় আঘাত দেওয়ার সীমা অতিক্রম করে তখন ভালো স্মৃতি গুলো কে মনে রেখে দূর থেকে ভালবাসা উচিৎ, কাছে গেলে সে আবার আঘাত দেবে, সম্মান এর কথা ভুলে গিয়ে শুধু নিজের দিকটা দেখবে। ঝগড়া কাদের না হয়, ক্ষমা চায় অথবা মানিয়ে নেয়, যার কাছে সম্পর্কের গুরুত্ব বেশি তারা অনিচ্ছাকৃত কষ্ট দিতে পারে কিন্তু ইচ্ছে করে কখন‌ই নয়। তার থেকে দূরে চলে গিয়েও তার শুভাকাঙ্ক্ষী থাকে, ধরেও যদি নেওয়া যায় দোষ আমাদের,  কিন্তু যার মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে, যারা বলতে পারে এরপর কি কি হয় দেখতে, তাদের সম্পর্কের প্রতি দায়বদ্ধতা বা মানসিকতা সম্পর্কে অন্য ধারনা জন্মায়। আমাদের মতো মানুষ কখনও ছেড়ে যেতে পারিনি আজও পারবোনা, তাদের প্রতি কোনো চাওয়া পাওয়া, দাবি দাওয়া, অভিযোগ অভিমান কিছু নেই, ফিরে আসারও অপেক্ষা নেই। এগুলো থাকতে গেলেও তার জন্য মনে একটা স্থান প্রয়োজন, সেটা আর তার জন্য নেই, যেটুকু আছে সেটা সেই পুরোনো মানুষ টার জন্য, পাল্টে যাওয়া মানুষটার জন্য নয়, সে আগের মতো হলেও সে জায়গা টা আর দেবোনা, সেটার যোগ্য নয় এবং সম্মান দিতে জানেনা জায়গাটার।

 

"যো ভি ম্যায় কেহনা চাহু, বারবাদ কারে আলফাজ মেরে..."

 

 এটাও জানি আমাদের হারালে হয়তো তাদের কিছু যায় আসেনা কিন্তু আমার মতো মানুষের কষ্ট হয় বারবার তারা দরজা বন্ধ করে দেবে আর বারবার দরজায় ঠোকর মারতে মারতে আমরা ক্লান্ত।  আগেও অনেক ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত অনেক আঘাত দিয়েছে অনেক মানিয়েছি, আমাদের দ্বারা যেসব বিষয়ে তারা বিরক্ত হয়েছে কষ্ট পেয়েছে তার জন্য ক্ষমা চাই, কিন্তু আজ আর নয়, তাদের ক্ষমাটাও চাইনা, কিছু চাইনা আমি খারাপ হয়ে থাকতে চাই, এরপর আমার নাম শুনে গালাগালি দিলে তাও স্বাগত। তারা দরজা বন্ধ করেছে বারেবারে, অনেক ভয় দেখিয়েছে, আঘাত দিতে দিতে ভুলে গেছে দরজা এদিকেও বন্ধ হয়।  কাউকে অনেকটা স্মৃতি দিয়ে চলে যেন না যায় তারা, সম্পর্কের মানে বুঝে তবেই এগোক আর ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ আর আবদারের বা অধিকারের পার্থক্য বুঝুক, অহংকার আর আত্মসম্মান কোনটা বুঝুক, সোজা ভাষায় হ্যাঁ বা না বলার সাহস পাক তারা, ভালো টাকে ভালো খারাপ কে খারাপ বলার স্পর্ধা রাখুক, অনেক অনেক ভালো থাক তারা। আমাদের‌ও যেন উপরের জিনিস গুলো বজায় থাকে, বিদ্যা বিবেক বুদ্ধি ধৈর্য যেন পাই।

 

হ্যাঁ কষ্ট হবে, সারাজীবন হয়তো হবে, তবে রোজ রোজ মরার চেয়ে একদিনে মরে যাওয়া ভালো।

হিংসা অবিশ্বাস বিশ্বাসঘাতকতার যুগে দূর থেকেই ভালোবাসায় বিশ্বাসী হ‌ওয়া বেশি প্রয়োজন। 






"আমি উন্মাদ (সুমিত মাজি)। আমি বাংলা সাহিত্যের কিছুই প্রায় জানিনা তবু লিখি টুকটাক। ছোট থেকে ডাইরি লিখতে লিখতে এখন লেখাটাই হবি। আমি লেখক বা কবি নই। আমি তো  সবার মনের কথা বলি।



কোন মন্তব্য নেই

luoman থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.